Skip to content Skip to sidebar Skip to footer

মার্কেটপ্লেসে কাজ করার জন্য যথেষ্ট প্রস্তুতি আছে তো?

আমরা কেউ হয়ত কোর্স করে কাজ শিখেছি, কেউ আবার ইউটিউব দেখে। এরপর আমরা যখন মার্কেটপ্লেসে ঢুকি এবং বায়ারদের কে প্রোপজাল পাঠাই বা নক পাই, তারপর কেন যেন তাদের থেকে আর রিপ্লাই পাই না, বা অর্ডার টা কনফার্ম করতে পারিনা। কারন আমাদের প্রস্তু্তিতে ঘাটতি আছে।

চলুন দেখা যাক কি কি প্রস্তুতি থাকা দরকার

১। প্রোফাইল সাজানো।

সুন্দর একটা প্রোফাইল পিক দিন যেন আপনাকে কনফিডেন্ট মনে হয়। এক লাইনে আপনার পরিচয় দিন আর ডেস্ক্রিপশনে বুঝিয়ে দিন আপনাকে কেন পিক করা যায়। আপনি কোন ডিগ্রিধারি তাতে বায়ার এর কিছুই যায় আসেনা, আপনি গত ৬ মাস বা বছরে কি কি কাজ করেছেন এবং বায়ার জন্য কি কি করতে পারবেন তা গুছিয়ে লিখতে পারেন। যা পারবেন তাই লেখা উচিত, বাড়িয়ে মিথ্যা লিখার দরকার নাই। কিভাবে এনগেজিং বায়ো লিখতে হয় তা নিয়ে স্টাডি করতে পারেন।

২। ফাইভার এর ফ্রিল্যান্সিং এসেনশিয়াল ফ্রি কোর্স টা করা।

আমরা অনেকে জানিই না যে ফাইভার এর এরকম একটা কোর্স আছে, আমি নিজে করেছি এবং এটা খুবই হেল্পফুল। কোর্স টা করলে জানতে পারবেন কিভাবে একটা ভালো প্রোফাইল তৈরী থেকে শুরু করে ভালো একটা গিগ তৈরি করা যায়, ইমেজ ও টাইটেল কেমন হওয়া উচিত? কিভাবে ভালো ডেসক্রিপশন লিখতে হয়, এবং আরো জানতে পারবেন AIDA সেলস মেথড সম্পর্কে। এটা আপনার জন্য অবশই করনীয় একটা কাজ এর মত একটা।
কোর্স লিঙ্ক প্রথম কমেন্টে পাবেন ইনশাআল্লাহ।

৩। পোর্টফলিও সেটআপ করা।

আপনি হয়ত ওয়ার্ডপ্রেস দিয়ে সাইট বানাতে পারেন, বা আপনি অনেক ক্রিয়েটিভ ডিজাইনার কিন্তু বায়ার কিভাবে বুঝবে যে আপনি আসলেই পারেন? আপনি যেই বিষয়ে দক্ষ তার প্রমান স্বরুপ সে কাজগুলো একটা প্লাটফর্মে রাখুন। ডিজাইনার হলে বিহ্যান্স, ড্রিবল বা পিন্টারেষ্টে আপলোড করতে পারেন। ওয়েব ডেভেলপার হলে নিজের সাইট বানান, সাব-ডোমেইন করে আরো কিছু সাইট রেডি করতে পারেন। এসইও এক্সপার্ট হলে নিজের নামে কিওয়ার্ড র‍্যাঙ্ক করে দেখান, মোট কথা আপনি যে এক্সপার্ট তা মুখে না বলে কাজে প্রমান দিন। কারন বায়ার আপনাকে মেসেজ করলে প্রথমেই দেখতে চাইবে আপনার রিসেন্টলি কি কি কাজ করেছেন।

৪. গিগ এর ধরন অনুযায়ী পোর্টফোলিও রেডি রাখা।

আপনার গিগ যদি হয় রিয়েল এষ্টেট লোগো ডিজাইন নিয়ে তাহলে গিগ তৈরীর সময় ই আপনার করা কিছু রিয়েল এষ্টেট লোগো রেডি রাখুন, যখনি বায়ার ঐ গিগে ক্লিক করে কাজ দেখতে চাইবে তখনি ঐ রিলেটেড কাজ গুলো দেখান, ইমেজ পাঠাতে পারেন বা পোর্টফলিও লিঙ্ক দিতে পারেন, এতে বায়ার আশ্বস্ত হবে যে আপনি হয়ত তার জন্যে ও এমন কিছু করতে পারবেন, আর যদি কাজগুলো তার পছন্দ হয় তাহলে আপনার কাজ ৬০% হয়ে যাবে।

৫। কর্ম পদ্ধতি সম্পর্কে ধারনা দেওয়া।

কিছু কাজের ক্ষেত্রে বায়ার জানতে চাইবে তুমি এটা কিভাবে করবে? কোন টুলস দ্বারা? ওয়ার্কিং প্রসেস কি? মূলত এই প্রশ্নগুলো উদ্দেশ্য হলো বায়ার কনফার্ম হতে চায় এবং সে একটা ক্লিয়ার ধারনা চায় যে তার কাজ টা কিভাবে সম্পন্ন হবে। আমি এই পরিস্তিতি টাকে একটা সুযোগ হিসেবে নেই। যখনি আমাকে এরকম জিজ্ঞেস করে তখন আমি যতটা সুন্দরভাবে সম্ভব এটা প্রেজেন্ট করি, তাকে স্টেপ বাই স্টেপ প্ল্যান শেয়ার করি, কয়টা ধাপে তার কাজ টা সম্পন্ন হবে এবং কবে ডেলিভারি করতে পারবো তার একটা পরিষ্কার ধারনা দেই, আর এতে করে বায়ার রিপ্লাই করে (Wow! Sounds great)
এতে বায়ার খুশি হয় এবং আপনার প্রতি তার আস্থা বারে।

৬। কি কি লাগবে তা আগেই চেয়ে নিন।

যদি ওয়েবসাইট এর কাজ করেন তাহলে আগেই জিজ্ঞেস করুন যে ডোমেইন হোষ্টিং আছে কিনা, না থাকলে কোনটা ভালো হবে তা জানাতে পারেন। মোট কথা কাজ টা শুরু করতে আপনার কি কি লাগবে তা বায়ার কে জানান, তাহলে অর্ডার এর পরই কাজ শুরু করতে পারবেন।

৭। প্রতিদিনি শিখতে হবে।

আমি এরকম অনেক কাজ করেছি যা আমি জানতাম ই না, বায়ার যখন আমাকে নতুন কিছু করতে বলে বা কোন ফিচার চায় যা সম্পর্কে আমার আগে ধারনা ছিলনা, তখন বায়ার এর কাছে কয়েক মিনিট সময় চাই এবং ইউটিউবে চেক করি এটার সমাধান আছে কিনা, যদি থাকে তাহলে বলি হ্যা পারবো। এবং সেটা শিখে তারপর করে দিই। তো এমন পরিস্থিতি আপনারও আসবে, তখন আপনাকেই সমাধান খুজতে হবে ও প্রতিনিয়ত শেখার মধ্যেই থাকতে হবে। যদি সম্ভব হয় তাহলে হ্যা বলবেন, নাহলে বলে দিবেন যে আপনি আপাতত এই ব্যাপারে তাকে হেল্প করতে পারছেন না।

৮। যা করার ফাইভারেই করুন, বাইরে নয়।

অনেক সময় বায়ার ইমেইল বা হোয়াটসএপ নাম্বার দিয়ে দিবে প্রজেক্ট নিয়ে বিস্তারিত কথা বলার জন্য। ভুলেও সেই ফাদে পা দেয়া যাবেনা। যদি বায়ার খারাপ হয় তাহলে আপনাকে পরে ব্ল্যাকমেইল করবে এই বলে যে তুমি যদি এটা না করো তাহলে তুমি আমার সাথে বাইরে কথা বলে রুলস ব্রেক করেছে, আমি রিপোর্ট করব, এতে আপনার ক্যারিয়ার শেষ। কেউ নাম্বার বা মেইল দিলে আমি বলি (According to Fiverr rules we have to contact here) আর কি কি ওয়ার্ড ফাইভারে বলা যাবেনা তা গুগলে সার্চ করলেই পেয়ে যাবেন।

৯। কল টু একশন

যখন মনে হবে সব আলোচনা শেষ, আপনি কাজ সম্পর্কে ধারনা পেয়ে গেছেন, তখন গিগ এর লিঙ্ক টা শেয়ার করে বলুন (You can order my gig from the link to start the project) এতে বায়ার হাতের কাছেই অর্ডার করার লিঙ্ক টা পাবে এবং কাজটি শুরু করতে পারবেন।

১০। How to sell?

আপনার কোন বিষয়ে যত দক্ষই হন না কেন যদি তা সেল করতে না পারেন তাহলে ফলাফল শুন্য, লেভেল ওয়ান হওয়ার পর যখন এই কথাটা বুঝতে পারি তখন সব বাদ দিয়ে প্র্যায় ২ মাস শুধু সেলস এর ওপর পরাশোনা করি, ভিডিও দেখি। আমার ধারনা এই দক্ষতা দিয়ে আমাকে ক্লায়েন্ট কমিউনিকেশন করতে এবং টপ রেটেড পর্যন্ত আসতে অনেক সাহায্য করেছে।

এই ১০ টা স্টেপই যথেষ্ট না, আপনার কাজের ধরন অনুযায়ী এটা আপনাকেই আপডেট করে নিতে হবে। আর এই প্রস্তুতির পর যখন বায়ার আপনাকে মেসেজ করবে তখন আপনার জন্য অনেক ইজি হবে কমিউনিকেট করা, যা কিনা অর্ডারে কনভার্ট করার হার বৃদ্ধি করবে।

অভিজ্ঞরা কিভাবে বিষয়গুলো হ্যান্ডেল করেন তা কমেন্ট করার অনুরোধ রইল, এতে নতুনরা আরো কিছু জানতে পারবে।
সবার মতামত আশা করছি।

ধন্যবাদ,
মোঃ মাসুম

What's your reaction?
0Smile0Lol0Wow0Love0Sad0Angry

Leave a comment