Skip to content Skip to sidebar Skip to footer

ফাইবার র‍্যাঙ্কিং এলগরিদম এবং আমাদের ভুল ধারণা, যেভাবে র‍্যাঙ্ক হতে পারে আপনার গিগ

“ভাই আমি অনেক সুন্দর করে একটা গিগ তৈরি করেছি কিন্তু গিগ র‍্যাঙ্ক করে না, ইমেজ, টাইটেল, ডেসক্রিপশন সবকিছুতেই এসইও এপ্লাই করেছি কিন্তু তবুও গিগ র‍্যাঙ্ক করে না করে না। এখন উপায় কি?”

এটা হচ্ছে আমাদের ফাইভার সেলারদের জাতীয় সমস্যা। প্রতিদিনি এই ধরনের দু একটা পোষ্ট, কমেন্ট বা মেসেজ সামনে আসেই। আজ আমরা বোঝার চেষ্টা করবো কিভাবে ফাইভার র‍্যাঙ্কিং এলগরিদম কাজ করে, আমি দেখেছি এটা নিয়ে আমাদের অনেকের মাঝে কিছু ভুল ধারণা ও আছে, আর সর্বশেষ আলোচনা করব কিভাবে আপনার গিগ র‍্যাঙ্ক হতে পারে। এই আলোচনা টা হবে আমার গত ৫ বছরের ব্যাক্তিগত  অভিজ্ঞতার ওপর, এমনও হতে পারে যে আমার সাথে আপনি একমত না, সেক্ষেত্রে আপনার মূল্যবান মতামত যুক্তি সহ কমেন্টে আশা করছি।

ফাইভার র‍্যাঙ্কিং অ্যালগরিদম কিভাবে কাজ করে?

গিগ র‍্যাঙ্কিং করার সময় প্রধান যেই বিষয়টাকে লক্ষ্য করে তা হচ্ছে ফাইভার এর প্রফিট, অর্থাৎ আপনার গিগ টাকে একটা ভালো পজিশন দিয়ে তার লাভ কি? ভালো পজিশন পাওয়ার পর কি আপনি ভালো সেল পাচ্ছেন? আপনি সেল পেলে ফাইভার দুই পক্ষ মিলিয়ে ৩০% প্রফিট করবে, কিন্তু ভালো প্লেস পাওয়ার পরও যদি আপনার গিগ সেল না পায় তাহলে সেই পজিশন টা আর থাকে না, তখন ফাইভার অন্য কোন একটা গিগ কে সেই সুযোগ টা দেয় যেন ভালো সেল এর মাধ্যমে তার এবং ফাইভার ওভয়েরই প্রফিট হয়।

প্রমান সরুপ এমন অনেক পোষ্ট পাবেন বা নিজেরটা দিয়েও বুঝতে পারবেন যে কোন একটা গিগ হয়ত প্রথম পেজে আছে, ইম্প্রেশন ক্লিক সবই ভালো, একদিন হঠাত করে দেখলেন গিগ আর প্রথম পেজে নেই, ২ বা ৩ নং পেজে চলে গেছে, কারন অনেকদিন হয়ত অর্ডার পান না।

আবার আপনার গিগ হয়ত ২ বা ৩ নং পেজে আছে, আর আপনি হয়ত সেই গিগটাতে কোন ভাবে ২/৩ টা অর্ডার পেয়ছেন এবং ডেলিভারি করে ভালো রেটিং পেয়েছেন, দেখবেন সেই গিগ প্রথম পেজে চলে এসেছে। কারন ফাইভার দেখবে আপনার গিগটা কে ভালো প্রফিট দিচ্ছে।

র‍্যাঙ্ক হারানোর কিছু কারন

১। যদি অনেকদিন কোন একটা গিগে অর্ডার না পান তাহলে র‍্যাঙ্ক হারাবে।

২। যদি খারাপ রিভিও পান তাহলে র‍্যাঙ্ক হারাবে, কারন ফাইভার চায় বায়ার যেন সেরা কাজ টা পায়, তাহলে আবার আসবে, নাহলে হয়ত আর আসবেনা আর ফাইভার এর প্রফিট কমে যাবে।

৩। হিডেন রিভিউ খারাপ হলে র‍্যাঙ্ক হারাবে, বায়ার হয়ত কোন কারনে আপনাকে ৫* দিলো, কিন্তু পরদিন তার কাছে যখন হিডেন রিভিউ অপশন টা আসবে তখন যদি সেখানে খারাপ রিভিউ দেয় তাহলেও র‍্যাঙ্ক হারাতে পারে।

৪। ঘন ঘন অর্ডার ক্যান্সেল হলে র‍্যাঙ্ক হারাতে পারে

৫। সঠিক সময়ে ডেলিভারি দিতে না পারলে র‍্যাঙ্ক হারাতে পারে।

এই ৫ টা কারনও মাঝে মাঝে ব্যাতিক্রম হতে পারে, দেখা যাবে আপনি ১* রেটিং পেয়েছেন কিন্তু তবু গিগ প্রথম পেজে আছে, এর কারন হতে পারে আপনার কম্পিটিটর রাও একি সময়ে খারাপ রিভিও পেয়েছে, বা আপনার গিগ যেই ক্যাটাগরিতে আছে সেখানে হয়ত গিগ ই অল্প কয়েকটা।

গিগ র‍্যাঙ্কিং ও এসইও নিয়ে কিছু  ভুল ধারনা।

আমরা গিগ এইসইও কে র‍্যাঙ্কিং এর জন্য অনেক গুরুত্বপুর্ন মনে করি, গুরুত্ব আছে, তবে আমার মতে সেটা ১০% থেকে ১৫% এর বেশি কোন ভাবেই না। গিগ এসইও শুধুমাত্র তখনি আপনাকে ফলাফল দিবে যখন কম্পিটিটর কম, অর্থাৎ আপনি যদি এমন একটা ক্যাটাগরি খুজে বের করতে পারেন যেখান সব মিলিয়ে গিগ আছে ৩-৪ পেজ পর্যন্ত আর তখন যদি গিগ সঠিকভাবে এসইও করা যায় তাহলে হয়ত আপানার গিগ টা প্রথম বা দ্বিতীয় পেজে আসতে পারে।

কিন্তু টপ কোন কিওয়ার্ড এর জন্য শুধুমাত্র এসইও করে প্রথম পেজে আসা কোনভাবেই সম্ভব না, বিশ্বাস না হলে আমি দুইটা কিওয়ার্ড বলি, নতুন একটা গিগ তৈরি করে প্রথম পেজে আসার চেষ্টা করে দেখতে পারেন, আসতে পারলে আমাকে জানাবেন প্লিজ, তাহলে আমিও আপনার কাছে থেকে ট্রিক্স টা শিখে নিবো।

কিওয়ার্ড = “ wordpress website design ” এবং “ Logo design “

এই ব্যাপারে একটা বিষয় একটু ভিন্ন রেজাল্ট দিতে পারে, যদি আপনি টপ রেটেড বা লেভেল টু সেলার হন, অথবা যদি আপনি শেষ ১০-১৫ কাজ ভালো প্রাইসিং, পাবলিক ও হিডেন রিভিউ ভালো পেয়ে থাকেন তাহলে মোটামুটি টপ কোন কিওয়ার্ডের জন্য গিগ অপ্টিমাইজ করলে ভালো পজিশন পাওয়ার সম্ভাবনা আছে, আমি নিজে পেয়েছি। তার মানে এই না যে এক চান্সেই প্রথম পেজে চলে আসবে, হয়ত ২/৩ নং পেজে আসতে পারে।

মূল থিউরি একটাই, ফাইভার চায় কিভাবে তার প্রফিট বারবে, আপনার রিসেন্ট পারফরমেন্স ভালো হলে ফাইভার মাঝে মাঝে আপনাকে সুযোগ দিবে, আর তখন যদি পারফরমেন্স কন্টিনিউ করা যায় তাহলে আর পেছনে তাকাতে হবেনা ইনশাআল্লাহ।

অবশ্যই গিগ টা এসইও ফ্রেন্ডলি হওয়া উচিত, এতে করে ফাইভার আপনার গিগ পছন্দ করবে এবং মাঝে মাঝে সুযোগ দিবে।

যেভাবে র‍্যাঙ্ক হতে পারে আপনার গিগ

১। এভারেজ সেলিং প্রাইস যদি বেশি হয় তাহলে গিগ র‍্যাঙ্ক করবে, ধরা যাক আপনার আগে কোন একটা গিগ আছে যার প্রাইস ১০ ডলার, আপনার প্রাইস ১০০ ডলার। সে যদি ১০ টা অর্ডার পায় তাহলে টোটাল সেল হবে ১০০ ডলার, আর পানি ৫ টা অর্ডার পান তাহলে টোটাল সেল ৫০০ ডলার, এক্ষেত্রে আপনি ফাইভার কে বেশি প্রফিট দিচ্ছেন, দেখবেন খুব দ্রুতই আপনার গিগ তার আগে চলে গেছে।

২। যত বেশি সেল তত বেশি র‍্যাঙ্ক, আমার একটা গিগ ছিল যা কিনা আমি লং টেইল কিওয়ার্ড দিয়ে অপটিমাইজ করেছিলাম, কিন্তু সেটা কে টার্গেট করেছিলাম টপ একটা কিওয়ার্ড এর জন্য। স্বাভাবিকভাবেই গিগ টা র‍্যাঙ্ক হওয়ার কথা না, কিন্তু আমার রেগুলার ক্লায়েন্ট দের থেকে ঐ কাট্যাগরির কাজগুলো নিয়েছিলাম কাষ্টম অর্ডার এর মাধ্যমে ঐ গিগটাতে, এভাবে ১৫-২০ টা কাজ করার পর একদিন আবিষ্কার করলাম আমার গিগ টা ঐ টপ ক্যাটাগরির প্রথম পেজে। কারন একটাই, নিয়মিত ঐ গিগটাতে অর্ডার পাওয়া, যা কিনা ফাইভার এর জন্যে ও প্রফিট। আর আমার গিগ প্রাইস কোনদিনি পুটি ধরার জন্য ছিলনা।

৩। লো কম্পিটিটিভ কিওয়ার্ড খুজে গিগ তৈরি করুন এবং এমন ভাবে টাইটেল অপটিমাইজ করুন যেন ভবিষ্যতে টপ কোন কিওয়ার্ডেও র‍্যাঙ্ক করার সুযোগ থাকে।

৪। সোশ্যাল মিডিয়াতে মার্কেটিং করে অর্ডার পাওয়ার চেষ্টা করুন, যদি এভাবে ৮-১০ সেল আনতে পারেন তাহলে গিগ অটোমেটিক র‍্যাঙ্ক করবে ইনশাআল্লাহ।

আশা করছি ফাইভার এলগরিদম সম্পর্কে কিছুটা ধারনা পেয়েছেন ও বুঝতে পেরেছেন কেন আপনার গিগ র‍্যাঙ্ক করেনা এবং কিভাবে র‍্যাঙ্ক করানো যেতে পারে।

এতক্ষন যা আলোচনা করলাম তা একান্তই আমার ব্যাক্তিগত অভিজ্ঞতা, যা আমার জন্যে কাজে লেগেছে। আপনার ক্ষেত্রে কিছুটা ভিন্ন হতে পারে। আপনার মতামত কমেন্টে আশা করছি।

ধন্যবাদ,

মোঃ মাসুম

 

What's your reaction?
3Smile1Lol0Wow2Love0Sad1Angry

Leave a comment