Skip to content Skip to sidebar Skip to footer

রিপিটেড অর্ডার পাওয়া যায় এমন ৫টি কাজ শিখে শুরু করতে পারেন ফ্রিল্যান্সিং

ফ্রিল্যান্সিং করার জন্য অনেক ধরনের কাজ থাকলেও এমন কিছু কাজ আছে যা একবার করে বায়ারকে স্যাটিসফাই করতে পারলে ওই বায়ার আপনাকে বারবার অর্ডার করবে। অর্থাৎ আপনি যদি ১০ থেকে ১৫ টা কাজ করতে পারেন এবং ওই বায়ারগুলো যদি স্যাটিসফাই হয় তাহলে তারা রেগুলার আপনাকে অর্ডার করে যাবে। আপনার কাজের কোন অভাব হবে না।

আজ আমি এমন পাঁচটি কাজের কথা বলব যা শেখা তুলনামূলক সহজ বিশেষ করে নতুনদের জন্য। আমি ফ্রিল্যান্সিং শুরুর আগে কেউ যদি আমাকে এই পাঁচটা কাজের কথা বলতো তাহলে হয়তো আমি এর মধ্য থেকে কোন একটা পছন্দ করে শুরু করতাম। কারণ এই কাজগুলো এমন যে বায়ারের নিয়মিত প্রয়োজন হয় এবং তারা যদি কারো কাজে স্যাটিসফাই হয় তাহলে নিয়মিত অর্ডার করে থাকে। 

চেষ্টা করব প্রতিটা কাজ সম্পর্কে বিস্তারিত বলার, এই কাজগুলো কাদের প্রয়োজন বা কারা অর্ডার করে? কিভাবে শিখবেন এবং কোথা থেকে অর্ডার পাবেন।

চলুন শুরু করা যাক…

১. আর্টিকেল রাইটিং

শুধুমাত্র ইংরেজি জানা থাকলে যে সেক্টরে ফ্রিল্যান্সিং করা যায় তা হচ্ছে আর্টিকেল রাইটিং বা কনটেন্ট রাইটিং। যে ওয়েবসাইটগুলো প্রফেশনাল ব্লগিং করে তাদের মূলত আর্টিকেল রাইটিং সার্ভিস টা দরকার হয়। যেমন আমরা যখন সার্চ করি ২০ হাজার টাকার মধ্যে সেরা ক্যামেরা ফোন, বা অমুক প্রোডাক্ট এর রিভিউ, তারপর যেই আর্টিকেলগুলো পাই তা কেউ না কেউ লিখেছে, এটাই হচ্ছে আর্টিকেল রাইটিং বা কন্টেন্ট রাইটিং। এই রাইটিং এর কাজটি আপনাকে শিখতে হবে। এই ওয়েবসাইট গুলো যারা পরিচালনা করে তারা প্রতিদিনই নতুন নতুন আর্টিকেল পাবলিশ করে, তাই তাদের আর্টিকেল রাইটার হায়ার করতে হয়। আপনি যদি একবার ভালো কিছু আর্টিকেল লিখে তাদেরকে স্যাটিসফাই করতে পারেন, তাহলে পরবর্তী আর্টিকেল লেখার জন্য আপনাকেই হায়ার করবে। আর এরকম দশটা সাইটের মালিকদের সাথে কাজ করতে পারলে আপনি কাজ করে শেষ করতে পারবেন না। বর্তমানে বাজারে এসেছে চ্যাট জিপিটি, যা কিনা কয়েক মিনিটেই অনেক ভালো মানের আর্টিকেল লিখে দিতে পারে। প্রথমে আপনাকে জানতে হবে আর্টিকেলের ফান্ডামেন্টাল গুলো কি কি? তারপর চ্যাট জিপিটির সাহায্যে আপনি নিজেই খুব অল্প সময়ে অনেক ভালো মানের আর্টিকেল লিখতে পারবেন।

এক থেকে দেড় মাসের মধ্যেই আপনি এই বিষয়ে দক্ষ হয়ে যেতে পারবেন, পরবর্তীতে নিজে ব্লগ সাইট তৈরী করেও google এডসেন্সের মাধ্যমে আর্ন করা সম্ভব।

তাই অনলাইনে সহজে কাজ করার জন্য আর্টিকেল রাইটিং আমার পছন্দের একটা কাজ।

২. সোশ্যাল মিডিয়া পোস্ট ডিজাইন

আপনি দেখে থাকবেন প্রতিটা ব্র্যান্ডেরই একটা ফেসবুক পেজ আছে আর সেখানে প্রতিদিন নতুন নতুন কনটেন্ট পাবলিশ করা হয়, সে কনটেন্ট তো কেউ না কেউ ডিজাইন করে। আপনি যদি সোশ্যাল মিডিয়া পোস্ট ডিজাইন শিখে আট থেকে দশটা একটিভ পেজকে সার্ভিস দিতে পারেন, তাহলে আপনি কাজ করে শেষ করতে পারবেন না। কারণ প্রতিটা পেইজেরই প্রতিদিনই নতুন কনটেন্ট তৈরি করতে হয়। আপনার ডিজাইন যদি তাদের স্যাটিসফাই করে তাহলে তারা আপনাকে নিয়মিত তাদের কন্টেন্ট ডিজাইন করার জন্য হায়ার করবে। 

এডোবি ফটোশপ অথবা ইলাস্ট্রেটর যেকোন একটা শিখেই আপনি ডিজাইনের কাজটা করতে পারেন, এছাড়াও আপনি অনলাইন ডিজাইনিং টুল ক্যানভা ইউজ করেও ব্যানার ডিজাইন করতে পারেন, সেখানে রয়েছে অনেক প্রি বিল্ট টেমপ্লেট যা ব্যবহারের মাধ্যমে সহজেই আপনি একটি সোশ্যাল মিডিয়া পোস্ট ডিজাইন করতে পারেন। অনেক কোম্পানি আছে যারা সাজেস্ট করে তাদের ব্যানার গুলো ক্যাণভা দিয়ে ডিজাইন করতে। দুই থেকে তিন মাসের মধ্যেই আপনি এগুলো শিখে যেতে পারবেন।

৩. টি-শার্ট ডিজাইন

উপরের দুটো ক্যাটাগরির মত টিশার্ট ডিজাইন ও অনেকটা একই রকম। মার্কেটপ্লেসের টি-শার্ট ডিজাইন কাজের অনেক চাহিদা, যারা এই বিজনেস করে তারা প্রতিদিনই নতুন নতুন ডিজাইন চায়, এক্ষেত্রে আপনি যদি ভালো ডিজাইন করতে পারেন তাহলে তারা আপনাকে নিয়মিত হায়ার করবে তাদের টিশার্ট ডিজাইন করার জন্য। টি শার্ট ডিজাইন লিখে সার্চ করলে ইউটিউবে পেয়ে যাবেন অনেক ভিডিও যেগুলো দেখে দুই থেকে তিন মাসের মধ্যেই আপনি এই বিষয়ে দক্ষ হয়ে উঠতে পারবেন।

৪. ইমেইল মার্কেটিং

আপনার যদি সেলস ও মার্কেটিং এর ব্যাপারে আগ্রহ থাকে তাহলে ইমেইল মার্কেটিং হতে পারে আপনার জন্য দারুন একটা সুযোগ। মার্কেটপ্লেস ও বাইরে ইমেইল মার্কেটিং এর চাহিদা ব্যাপক, ই-কমার্স থেকে শুরু করে বড় বড় সকল কোম্পানি ইমেইল মার্কেটিং করে থাকে। আর এখানে যদি আপনি ভাল পারফরম্যান্স করতে পারেন তাহলে তারা আপনাকে নিয়মিত হায়ার করবে। ই-কমার্স বিজনেস কে টার্গেট করে আপনি শিখতে পারেন মেইলচিম্প অথবা ক্ল্যাভিউ। এগুলো শিখতে দুই মাসের বেশি লাগার কথা না। তারপর একটা পোর্টফলিও তৈরি করে মার্কেটপ্লেস ও বাইরে কাজের জন্য নিয়মিত খোঁজ করতে পারেন।

৫. এসইও

আপনি যদি লম্বা রেসের এর ঘোরা হতে চান তাহলে এসইও আপনার জন্য। এসিও শিখে একটা ওয়েবসাইটকে গুগলের সার্চ রেজাল্ট এর প্রথম পেজে নিয়ে আসা যায়, যেখান থেকে পাওয়া যায় হাজার থেকে শুরু করে লক্ষ লক্ষ ভিজিটর। সত্যিকারের দক্ষ এসইও এক্সপার্টের সংখ্যা খুবই কম। চার থেকে ছয় মাস ব্যয় করে আপনি যদি এসইও এক্সপার্ট হতে পারেন তাহলে কারো কাজের আশায় আপনাকে বসে থাকতে হবে না আপনি নিজেই একটু ওয়েবসাইট তৈরি করে সেটা গুগলের রেংক করে অনেকভাবে আর্ন করতে পারেন।

Youtube এসইও এর উপর অনেকগুলো প্লে লিস্ট আছে, একটু খোঁজ নিয়ে দক্ষ একজনের প্লেলিস্ট শুরু করুন এবং পুরোটা দেখুন, এবং নিজে প্র্যাকটিস করুন। চার থেকে ছয় মাসের মধ্যে আপনি শিখে যেতে পারবেন এবং প্র্যাকটিস করার জন্য আরো দুমাস হয়তো লাগতে পারে। তারপর যদি আপনি একটি সাইট র‍্যাঙ্ক করতে পারেন তাহলে আর আপনার পেছনে তাকাতে হবে না।

আপনি কোনটা শিখবেন?

এই পাঁচটা কাজের প্রতিটা কাজই শেখা তুলনামূলক সহজ এবং কিছু বায়ারের সাথে কাজ করতে পারলে নিয়মিতই কাজ পাওয়া যাবে। তাই এখান থেকে আপনার ভালো লাগে এমন যেকোনো একটা বিষয় নিয়েই আপনি শুরু করতে পারেন।

কিভাবে শুরু করবেন?

প্রথম সিদ্ধান্ত নিন কোনটা শিখবেন, তারপর ইউটিউবে গিয়ে ওই সাবজেক্ট লিখে সার্চ করলে অনেকগুলো প্লেলিস্ট পাওয়া যাবে। সেখান থেকে একটা দিয়ে শুরু করুন, সবগুলো ভিডিও দেখুন। তারপর আপনি বুঝে যাবেন কি কি শেখা হয়েছে এবং কি কি শেখা বাকি। এবার যেগুলো বাকি সেগুলো আলাদা আলাদা ভাবে ইউটিউবে এ সার্চ করুন। দেখবেন অনেক ভিডিও তৈরি আছে।

এভাবে যেগুলো বাকি সেগুলো আপনি শিখে নিতে পারেন।

যখন আপনার মনে হবে মোটামুটি আপনি কাজ শিখেছেন, তখন নিজেকে প্রস্তুত করতে হবে মার্কেটপ্লেসে কাজ করার জন্য। পরবর্তী আর্টিকেলে পোর্টফোলিও ও মার্কেটপ্লেস সম্পর্কে লিখবো ইনশাল্লাহ।

আজ এ পর্যন্তই।

ধন্যবাদ,
মো মাসুম

What's your reaction?
1Smile0Lol1Wow1Love0Sad1Angry

Leave a comment